সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু লোককে বলতে শুনছি, ”ব্যক্তি তসলিমাকে পছন্দ করি না, বাট তার কবিতা পছন্দ করি, বা তার সাহিত্য পছন্দ করি।” যারা বলে তারা কেউই আমার পরিচিত নয়, আমার সঙ্গে তাদের কোনওদিন আলাপ হয়নি, তারা কেউ আমার সান্নিধ্যে আসেনি। তাদের সঙ্গে আমি কখনও দুর্ব্যবহার করিনি, তাদের কোনও ক্ষতি করিনি, তবে কী দেখে ব্যক্তি তসলিমাকে তারা অপছন্দ করে? তারা কি তাহলে আমার আত্মজীবনীর খণ্ডগুলো পড়েছে? সেসবে আমার যে চরিত্রের এবং আদর্শের বর্ণনা করেছি, তা তাদের পছন্দ নয়? মানুষের ওপর আমার অতিরিক্ত বিশ্বাস ,মানুষের জন্য আমার সহানুভূতি, সহমর্মিতা, আমার সরলতা উদারতা, আমার বারবার ঠকে যাওয়া, মানুষ চিনতে না পারা, জীবনের ঝুঁকি নিয়েও সত্য উচ্চারণের বোকামো, খুব বেশি আবেগপ্রবণ, মেরুদণ্ড সোজা করে চলা, দৃঢ়তা, আপসহীনতা, অতিরিক্ত স্বনির্ভরতা, মন্সটারের বিরুদ্ধে একার সংগ্রাম –এই দোষগুলো পছন্দ নয়? না ঠিক তাও নয়। তবে কী কারণ? ধর্মের সমালোচনা করি, নারীর সমানাধিকারে বিশ্বাস করি, এসবের জন্য আমার শত্রু সংখ্যা প্রচুর সে জানি। এসবও যদি আমাকে অপছন্দ করার কারণ না হয় তবে নিশ্চয়ই হাওয়ায় যে নিন্দেগুলো বা মিথ্যেগুলো ভাসে সেগুলো কারণ। জিহাদিরা, ওয়াজিরা, নারীবিদ্বেষীরা কম নিন্দে বা কম মিথ্যে তো ছড়ায়নি গত তিন দশকে! এই যেমন আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করি। দেখেছে কখনও কেউ আমাকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে? না। প্রস্রাব করার কোনও গোপন ফটো? না। আমি লিখেছি কোথাও যে আমি করি বা অন্যকে করতে বলি? তাও নয়।
আমি কিন্তু দুই সত্ত্বাকেই খুব ভাল করে চিনি। আমি লেখক বা কবি তসলিমার চেয়ে ব্যক্তি তসলিমাকে সম্মান করি বেশি, তাকে মর্যাদা দিই বেশি। লেখক বা কবি তসলিমাকে যদি ১০ এ ৫ দিই, ব্যক্তি তসলিমাকে দিই ১০ এ ১০।
Leave a Reply