বাংলাদেশের খুলনা জেলার বটিয়াঘাটায় মেয়ে-ফুটবলারদের পোশাক নিয়ে সেদিন বিচ্ছিরি ভায়োলেন্স ঘটে গেল। মেয়েদের মারা হলো। এমন মারা হলো যে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। টুপি দাড়িওয়ালা মৌলবাদিরা দল বেঁধে এসে এই হাঙ্গামা করেনি। করেছে ফুটবল ক্লাবের মেয়েরা যে মাঠে ফুটবল খেলে, সেই মাঠের কাছাকাছি এক বাড়ির লোকেরা। মেয়েরা কেন শর্টস পরে ফুটবল খেলবে, আপত্তি এখানেই। মেয়েরা ফুলপ্যান্ট পরে ফুটবল খেললে ওরা কি আপত্তি করবে না? করবে। বলবে ওড়না পরে খেলতে হবে। ওড়না পরার পর বলবে, এভাবে হবে না, ফুটবল যদি খেলতেই হয় হিজাব পরে খেলতে হবে। হিজাব পরার পর বলবে বোরখা পরে খেলতে হবে। বোরখা পরে ফুটবল খেললে বলবে নিকাব পরে খেলতে হবে। নিকাব পরে খেললে বলবে কী দরকার মেয়েদের ফুটবল খেলার, মেয়ে হয়ে জন্মেছে, ফুটবল খেলাটাই হারাম, ঘরের বাইরে বেরোনোটাই হারাম।
মেয়েরা শর্টস পরেছে বলে যারা হিংস্র হয়ে উঠেছে, তাদের দেখলে কেউ সন্ত্রাসী বলবে না, বা ধর্মান্ধ বলবে না। কিন্তু তারা দুটোই, সন্ত্রাসীও , ধর্মান্ধও। সন্ত্রাসীদের কোনও নির্দিষ্ট পোশাক নেই, তারা যে কোনও পোশাক পরেই সন্ত্রাস করতে পারে। বাংলাদেশটা সন্ত্রাসীতে ভরে গেছে। বড় সন্ত্রাসী মাঝারি সন্ত্রাসী ছোট সন্ত্রাসী, সবার দৃষ্টি মেয়েদের শরীরে, মেয়েদের চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত, সর্বত্র। এদের মাথায় ঘিলু বলতে কিছু আর অবশিষ্ট নেই, ঘিলু সরিয়ে জায়গা দখল করেছে বিকট পুরুষাঙ্গ । এরা পুরুষাঙ্গ দিয়েই এখন চিন্তাভাবনা করে, সিদ্ধান্ত নেয়। মেয়েদের ধর্ষণ করার, নির্যাতন করার, ঘরবন্দি করার সিদ্ধান্ত ওই ওপরতলা থেকেই আসে। এদের ভয় মেয়েরা ঘরের বাইরে বেরোলে পুরুষের মতো প্রতাপশালী এবং প্রভাবশালী হয়ে উঠবে, তখন পুরুষাঙ্গ দিয়ে মেয়েদের নিয়ন্ত্রণ করা আর সম্ভব হবে না, মাথা থেকে ওটিকে যথাস্থানে নামিয়ে আনতে হবে। সভ্য হতে হবে। এই সন্ত্রাসীরা আর যা কিছুই চাক, সভ্য হতে চায় না।
Leave a Reply